অনিদ্রার সমস্যা থেকে মুক্তির উপায়




 Bangla Health Tips: রাতে খাওয়া দাওয়া করে তাড়াতাড়ি শুয়ে তো পড়েছেন, এ দিকে ঘড়ির কাঁটা প্রায় সকাল হবো হবো করছে। আর কিছুক্ষণ পরেই ঘড়ির অ্যালার্ম নয়, পাখির ডাক শুনতে শুনতেই আপনাকে বিছানা ছাড়তে হল। এভাবে রাতটা কেটে গেল না ঘুমিয়েই। কিন্তু এই গল্পটা একদিন নয়, দিনের পর দিন যদি চলতে থাকে, তাহলে তার প্রভাব তো আপনার শরীর-মনের ওপর পড়বেই, সারাদিনের কাজও প্রভাবিত হবে এর ফলে।

অনিদ্রা হলো ঘুম আসার অক্ষমতা। ঘুমের এই ব্যাধিটি স্বল্পমেয়াদী বা দীর্ঘমেয়াদী হয়ে থাকে। খিটখিটে ভাব, অবসাদ, ক্লান্তি, অমনোযোগ ও মাথাব্যথা অনিদ্রার কিছু প্রভাব। সময় বা মেয়াদকালের উপর ভিত্তি করে অনিদ্রাকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছে- তীব্র অনিদ্রা এবং দীর্ঘস্থায়ী অনিদ্রা।

স্বল্প সময়ের জন্য যে অনিদ্রার সমস্যাটি হয়ে থাকে তাকে তীব্র অনিদ্রা বলা হয়। এই ধরনের অনিদ্রার সমস্যাটি কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। আর অনিদ্রার সমস্যাটি যখন এক মাস বা বেশি সময়ের জন্য হয়ে থাকে তখন তাকে দীর্ঘস্থায়ী অনিদ্রা বলে। তবে, এ ক্ষেত্রে নিম্নে দেয়া পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করলে অনিদ্রা থেকে মুক্তি মিলতে পারে, আসুন দেখে নেই পদ্ধতিগুলো।

কলা: কলায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম। আর মানুষের শরীরে পটাশিয়ামের উপস্থিতি, রাতে ঘুম কতটা গাঢ় হবে সেটি নিয়ন্ত্রণ করে। তাছাড়া কলার ট্রাইপটোফ্যান এবং ম্যাগনেসিয়াম রাতে ঘুম হতে সাহায্য করে। তাই ঘুমের ওষুধ বাদ দিয়ে রাতে নিয়মিত কলা খেয়ে বিছানায় যেতে পারেন। ঘুম হবে, নিশ্চিত!

দুধ: কলার মত দুধেও ট্রিপটোফ্যান এমিনো এসিড উপস্হিত যা সেরোটোনিন হরমোনের নিঃসরণকে বাড়িয়ে দেয় এবং ভাল ঘুমের জন্য সহায়ক। এছাড়া দুধের ক্যালসিয়াম অনিদ্রা দূর করতে সহায়ক। ঘুমুতে যাওয়ার ১ ঘন্টা পূর্বে ১ গ্লাস গরম দুধের সাথে ১ চা চামচ দারুচিনির গুড়া মিশিয়ে খেতে পারেন একটা গভীর ঘুমের জন্য।

দই: দুগ্ধজাত খাবার হিসেবে দইয়ে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম। এই উপাদান ঘুমে সাহায্যকারী ট্রাইটোফ্যান এবং মেলাটোনিন হরমোন বাড়াতে সাহায্য করে। তাই রাতে ঘুমানোর আগে দই খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে ভালো ঘুম হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে। তবে এই দই অবশ্যই খাঁটি হতে হবে। খাঁটি গরুর দুধ দিয়ে বানানো দই খেলেই অনিদ্রানাশক উপকারিতাটা পাবেন।

মধু: মধুর হাজারো উপকারিতার মধ্যে একটা অনেক বড় উপকারিতা হচ্ছে এটা অনিদ্রা দূর করতে অনেক সহায়তা করে। ঘুমাতে যাওয়ার আধা ঘন্টা আগে হার্বাল চা বা হালকা গরম দুধের সঙ্গে এক চামচ মধু মিশিয়ে খাওয়া যেতে পারে। মধু স্নায়ু শীতল করতে সাহায্য করে। ফলে রাতে ঘুম হয় অনেক ভালো, অনিদ্রা দূরীভূত হয়।

বাদাম: অনিদ্রা দূর করার জন্য আরেকটা কার্যকরী খাবার হচ্ছে বাদাম। শরীরে সেরোটোনিন হরমোনের পরিমাণ বাড়াতে সাহায্য করে বাদাম। এই হরমোন মস্তিষ্ককে সুখের অনুভূতি সৃষ্টি করতে সাহায্য করে। বাদামেও রয়েছে ট্রাইপটোফ্যান এবং ম্যাগনেসিয়াম। রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ১০ থেকে ১৫টি বাদাম ভালো ঘুম হতে সাহায্য করবে।

ভিটামিন: বিশেষ কিছু ভিটামিন সঠিক ঘুম চক্রকে বজায় রাখার জন্য বেশ প্রয়োজনীয়। শরীরে যদি এদের ঘাটতি হয় বা মাত্রা কমে যায়, তবে অনিদ্রার সমস্যা দেখা দেয়। অনিদ্রার লক্ষণের সাথে জড়িত ভিটামিনগুলোর তালিকা নিচে দেয়া হলো:

  • ঘুম ও স্মৃতিশক্তির ক্ষেত্রে ভিটামিন এ মস্তিষ্কের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। দুধ, ডিম, মুরগি ও গরুর মাংসতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ থাকে।
  • ভিটামিন বি৩, বি৫, বি৯ ও বি১২ এর ঘাটতি অনিদ্রার সমস্যার সাথে জড়িত। এই ভিটামিনগুলোর অভাবে দুর্বলতা, অবসাদ এবং অনিদ্রা দেখা দেয়। তাই আপনার শরীরে এই ভিটামিনগুলোর চাহিদা পূরণে ডিম, মুরগি ও দুগ্ধজাত পণ্য খাওয়ার চেষ্টা করুন।
  • ভিটামিন সি এবং ই হলো শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অক্সিডেটিভ স্ট্রেস প্রতিরোধে সাহায্য করে। তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই এবং টক জাতীয় ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে আপনার ভালো ঘুম হবে।

পরিশেষে, এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করেও যদি অনিদ্রা দূর না হয়, তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন।


❤ লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।

লেবেলসমূহ:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger]

MKRdezign

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget