স্বাস্থ্য বৃদ্ধি করুন সহজ কিছু নিয়ম মেনে...

 






Bangla Health Tips: পৃথিবী জুড়ে এমন অনেকেই রয়েছেন যারা কিনা ওজন কমাতে আধপেটা খেয়ে থাকেন। আবার এমন অনেকেই রয়েছেন যারা শত খেলেও স্বাস্থের কোনো উন্নতি হয় না। বাড়তি ওজন যেমন একটা সমস্যা, ঠিক একইভাবে রুগ্ন বা ভগ্ন স্বাস্থ্যের অধিকারী হলেও সমস্যা। সৌন্দর্য নিহিত হয় নিজের শরীরের গড়ন অনুযায়ী আদর্শ ওজনে অবস্থান করার মাঝে। আপনার ওজন যদি আদর্শ ওজনের চাইতে ৫ থেকে ১০ কেজি কম থাকে তবে বুঝতে হবে আপনি রুগ্ন মানুষ। একজন রুগ্ন মানুষের চেহারা স্বাভাবিক ভাবেই তার স্বাভাবিক সৌন্দর্য হারায়।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যে চেষ্টা করেও কিছুতেই ওজন বাড়াতে পারেন না। অনেকে হয়তো খুব খাওয়া দাওয়া শুরু করেন, কিন্তু তাতে লাভ আসলে বেশী কিছু হয় না। বরং অস্বাস্থ্যকর খাওয়ার ফলে স্বাস্থ্যহানি হতে শুরু করে। কেবল মোটা হলেই তো হবে না, হতে হবে সুগঠিত শরীরের অধিকারী। তাই না? কিন্তু তাহলে কি করবেন? যদি ওজন বাড়িয়ে সুগঠিত শরীর পাবার সম্ভব-অসম্ভব সকল চেষ্টা করেই ক্লান্ত হয়ে গিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার উপকারে আসবে এই টিপস গুলো। নিয়ম করে মেনে চলতে চেষ্টা করুন, অতি শীঘ্রই নিজের মাঝে পরিবর্তন দেখতে পাবেন নিঃসন্দেহে।

সকালের বিশেষ খাবার: প্রতিদিন সকালে বাদাম ও কিসমিস। ওজন বাড়ানোর জন্য বাদাম আর কিসমিসের বিকল্প নেই। রাতে ঘুমাবার সময় আধা কাপ কাঠ বাদাম ও কিসমিস ভিজিয়ে রাখুন অল্প পানিতে। সকালে সেগুলো ফুলে উঠলে খেয়ে নিন। সকাল শুরু করুন বাদাম ও কিসমিসের সাথে। বাচ্চাদের জন্যও এটা খুব ভালো একটা খাবার।

রাতের বিশেষ খাবার: রাতে ঘুমাবার পূর্বে দুধ ও মধু। ওজন বাড়ার জন্য এটি একটি অব্যর্থ কৌশল। রাতের বেলা ঘুমাবার আগে অবশ্যই বেশ পুষ্টিকর কিছু খাবেন। আর খিদে পেলে তো আয়েশ করে পেট পুরে খেয়ে নেবেন। আর সাথে সাথেই ঘুম। ফলে খাবারের ক্যালোরিটুকু খরচ হবার সময় পাবে না, ক্যালরিটুকু থেকে যাবে বাড়তি ওজন হিসেবে শরীরেই। ঘুমাবার আগে প্রতিদিন এক গ্লাস ঘন দুধের মাঝে বেশ অনেকটা মধু মিশিয়ে খেয়ে নিবেন।

তরল জাতীয় খাবার: একটু পর পর তরল জাতীয় খাবারে ক্ষুধা দ্রুত তৈরি করে। এজন্য আপনি ক্ষুধা তৈরি করার জন্য একটু পর পর তরল জাতীয় যেকোনো খাবার খেতে পারেন। তবে অবশ্যই মনে রাখবেন ভারী খাবার খাওয়ার আগে এবং খাবারের মাঝখানে কখনই পানি খাওয়া ভালো না। এতে করে খাবার মাঝখানে পানি ক্ষুধাটাকে নিবারণ করে। ফলে ভারী খাবার খাওয়ার রুচি থাকে না।

শাক + সবজি + ফল: প্রচুর ফল খান। ফল পুষ্টিকর খাবার এতে প্রচুর ক্যালরি পাওয়া যায়। প্রতিদিন ফল এবং ফলের রস খান। এমন অনেক ফল আর শাক-সবজি আছে যারা কিনা উচ্চ ক্যালোরি যুক্ত। যেমন- আম, কাঁঠাল, লিচু, কলা, পাকা পেঁপে, মিষ্টি কুমড়া, মিষ্টি আলু, কাঁচা কলা, পুঁইশাক ইত্যাদি। ফল ও সবজি খেলে স্বাস্থ্য যেমন ভালো থাকবে, তেমনি ওজনও বাড়বে।

মাছ + মাংস + ডিম: সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে চাইলে আগের তুলনায় অনেক বেশি করে প্রচুর পরিমাণে খেতে হবে মাছ, মাংস, ডিম বা। প্রতিদিন ২ – ৪ টি ডিমের সাদা অংশ খেলে খুব উপকারে আসবে, ডিমের সাদা অংশে রয়েছে প্রচুর প্রোটিন, ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই  যার ফলে দেহে প্রচুর হরমোন তৈরি হবে, যা বয়ে আনবে সুস্বাস্থ্য।

“বসা” ভাত: বলতে বোঝায় যে ভাতে মাড় ফেলা হয় না। মাড় ফেলে দিয়ে ভাতের স্টার্চের অনেকটাই চলে যায় মাড়ের সাথে। ওজন বাড়াতে চাইলে এই মাড় না ফেলাই ভালো। এর ফলে ভীষণ উপকার হবে ওজন বাড়াতে। আতপ চাল বা পোলাও চালের বসা ভাত সুস্বাদু ও লাগবে খেতে।

সফ্ট ড্রিংকস: সফ্ট ড্রিংকস এবং ফ্যাটি খাবার খেলে স্বাস্থ্য মোটা হয়। এতে বেশি পরিমানে ইন্সুলিন থাকে। ইন্সুলিন হরমোন তৈরি করে। যার সাহায্যে শরীরে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং ফ্যাট জমে। যখন ফ্যাটি ফুডস খাবেন, তখন পানি পান করুন, সফ্ট ড্রিংকস নয়। এমনকি ডায়েট সফ্ট ড্রিংকসও নয়। এটা খেলে আপনি ফ্যাটি ফুড খেতে পারবেন না।

খাবারের পরিমাণ: বাড়িয়ে নিন খাবারের পরিমাণ। খাবারের পরিমাণ বাড়ানো মানেই হাপুস হুপুশ করে একগাদা খেয়ে ফেলা নয়। আর সেটা সম্ভবও নয়। আপনি যদি কম খাওয়ার কারণে রোগা হয়ে থাকেন, তাহলে খাবারের পরিমাণ আপনাকে বাড়াতেই হবে। স্বাভাবিকভাবে যা খেয়ে থাকেন, তার ৪ ভাগের ১ভাগ পরিমাণ খাবার বাড়িয়ে খান প্রতিদিন।

শারীরিক ব্যায়াম: কিছু বিশেষ ব্যায়াম শরীরের পেশী তৈরি করে ও ওজন বাড়ায়। তাছাড়া ক্ষুধার উদ্রেকও করে। জিমে যাওয়া শুরু করুন নিয়মিত, ট্রেইনারের কথা মেনে চলুন। চমৎকার শরীর তৈরি হবে।আবার আপনি যদি শুধু ক্যালরিযুক্ত খাবার খেয়েই যান আর কোনো ধরনের ব্যায়াম না করেন তাহলে আপনার শরীরের কিছু অংশে অতিরিক্ত মেদ দেখা দেবে যেমন তলপেটসহ অন্যান্য অংশে কিন্তু আপনার ওজন বাড়াতে খুব একটা সহায়ক ভূমিকা রাখবে না। এজন্য যতটা সম্ভব শারীরিক ব্যায়াম করুন। এতে করে দেহের অতিরিক্ত মেদ নিঃসরণ হবে এবং গড়ে উঠবে সুগঠিত শরীর।

পরিশেষে, আপনি খাবার খাচ্ছেন কিন্তু কোনো নিয়ম মেনে খাচ্ছেন না এতে করে আপনার কোনো কাজই হবে না। আপনার স্বাস্থ্যের কোনোভাবেইুন্নতি হবে না। আপনি যদি সঠিক নিয়মে তালিকা তৈরি করে খাবার খান তবেই ওজন বাড়তে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। আর যদি এইসব না করেও আপনার ওজন না বৃদ্ধি পায়, তাহলে অবশ্যই একজন ভালো ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

❤ লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।

লেবেলসমূহ:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger]

MKRdezign

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget