Bangla Health Tips: সঠিক নিয়মে দাঁতের যত্ন না নিলে প্রায় আমাদের সবারই দাঁতের সমস্যা দেখা দেয়। দাঁতে সমস্যা মানেই শুরু হয়ে যাওয়া দাঁত ব্যথা। দাঁত ব্যথার প্রধান কারণ হলো ক্যারিজ বা দাঁত ক্ষয় রোগ। আবার দাঁত ও মাড়ির বিভিন্ন ধরণের সমস্যার কারণেও হতে পারে এ দাঁত ব্যথা। যেমন- ক্যাভিটি, মাড়িতে ইনফেকশন, রক্ত ক্ষরণ কিংবা আঘাতের কারণে দাঁতে ফাটল ইত্যাদি। দাঁতের ব্যথা হলে দ্রুত ডেন্টিস্টের কাছে যাওয়া খুবই জরুরি। কিন্তু সেটা সম্ভব না হলে কিছু ঘরোয়া পদ্ধতিতে ব্যথা কমাতে পারেন। আসুন জেনে নেই সেই পদ্ধতিগুলো সম্পর্কে।
বরফ: বরফের টুকরো ব্যথা উপশমে বেশ কার্যকরী। এজন্য পাতলা সুতি কাপড়ে একটি ছোট বরফের টুকরো নিয়ে পেঁচিয়ে নিন। যেখানে দাঁতে ব্যথা সেখানে গালের কাছে নিয়ে কয়েক মিনিট ধরে রাখুন। এতে ব্যথা অনেকাংশেই কমে যাবে। তবে, আপনার যদি এক্সপোসড নার্ভের সমস্যা থেকে থাকে তাহলে ঠান্ডার সংস্পর্শে ব্যথা আরও বেড়ে যেতে পারে।
রসুন: রসুনের এন্টিবায়োটিক উপাদান ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকরি উপাদান দাঁতের সংক্রমণ জনিত ব্যথায় দারুন কাজে দেয়। একটি রসুন ভেঙ্গে তাতে কিছুটা লবণ মাখিয়ে আপনার আক্রান্ত দাঁতের গোঁড়ায় লাগিয়ে রাখুন অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই দাঁতের ব্যথা কমে যাবে।
পেঁয়াজ: পেঁয়াজের অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান দাঁতের জীবাণু নষ্ট করে দাঁতের ব্যথা উপসম করে। প্রথমে দাঁতের ব্যথার জায়গাটা খুঁজে বের করুন। এবার একটি পেঁয়াজ আক্রান্ত জায়গার কাছাকাছি নিয়ে চাবান। আর যদি চিবোতে না পারেন এক টুকরা পেঁয়াজ কেটে নিয়ে আক্রান্ত জায়গায় রাখুন, দেখবেন ব্যথা কমে যাবে।
দারুচিনি: দারুচিনিতে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল আর ব্যথা কমানোর উপাদান রয়েছে। শুধু ব্যথা কমানোই নয়, দারুচিনি দাঁতকে আরো মজবুত করে তোলে। এইসব কারণে দারুচিনি দাঁত আর মাড়ির জন্য খুবই উপকারী। দাঁত ব্যথা করলে একটা দারুচিনির টুকরো নিয়ে যে অংশে ব্যথা হচ্ছে সেই অংশের উপর রাখুন, ধীরে ধীরে ব্যাথা কমে যাবে।
ভিনেগার: দাঁতের ব্যথা নিরাময়ে ভিনেগার খুবই উপকারী। অল্প পরিমাণ আপেল সিডার ভিনেগার অথবা সাদা ভিনেগার তুলায় নিয়ে ব্যথার জায়গায় কয়েক মিনিট চেপে ধরে রাখুন। এতে ব্যথা অনেকাংশেই কমে যাবে।
বেকিং সোডা: এক টুকরো তুলা একটু পানিতে ভিজিয়ে সোডা লাগিয়ে নিন এবং দাঁতে মাড়িতে ঘষে ঘষে লাগান। অথবা, এক চা চামচ বেকিং সোডা হালকা গরম পানিতে মিশিয়ে ঘরেই তৈরি করতে পারেন কেমিক্যাল বিহীন মাউথওয়াশ, সেটা দিয়ে কুলকুচি করতে পারেন।
উষ্ণ লবণ পানি: একগ্লাস বেশ গরম পানিতে খানিকটা লবণ মিশিয়ে কুলকুচি করুন। দেখবেন দাঁতের শিরশির ভাব ও ব্যথা কমে যাবে। কেননা গরম পানি আর লবণের কার্যকারিতায় দাঁতের টিস্যুগুলো সচল হয়ে উঠে আর সব জীবাণু তাদের কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
ব্যাবহৃত টি ব্যাগ: চা পাতায় রয়েছে ট্যানিন নামক উপাদান যা খুব দ্রুত দাঁতের ব্যথা উপশম করে। তাই চা বানানোর পর টি ব্যাগটি ফেলে না দিয়ে গরম থাকা অবস্থায় ব্যথা আক্রান্ত জায়গায় টি ব্যাগটি চেপে ধরে রাখুন। কিছুক্ষণের মধ্যেই দাঁতের ব্যথা কমে যাবে।
গোলমরিচ ও লবন: সমপরিমাণ কালো গোলমরিচের গুঁড়া আর লবন নিন। সামান্য পানি মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন। আক্রান্ত স্থানে কিছুক্ষণের জন্য এই পেস্টটি লাগিয়ে রাখুন। দিনে কয়েকবার এই পেস্টটি লাগিয়ে উষ্ণ লবণ পানি দিয়ে কুলকুচি করলে দাতের ব্যাথা কমে যাবে। এছাড়াও এই মিশ্রনটি সেনসিটিভ দাঁতের জন্য বেশ উপকারী। কেননা এরা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল, অ্যান্টি ইনফ্লেমেটরি ও অ্যানালজেসিক গুণ সমৃদ্ধ।
লবঙ্গ ও অলিভ অয়েল: দুইটি লবঙ্গ পিষে তা অল্প অলিভ অয়েল কিংবা যেকোনও ভেজিটেবল অয়েলের সাথে মিশিয়ে ব্যথার জায়গায় লাগান। লবঙ্গ ইনফেকশনের বিরুদ্ধে কাজ করে দাঁতের ব্যথা নিরাময়ে সাহায্য করে।
পরিশেষে, এই পদ্ধতিগুলো অবলম্বন করেও যদি দাঁত ব্যথা না কমে তাহলে সামান্যতম দেরি না করে তাড়াতাড়ি চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। অন্তত ৬ মাস পর পর ডেন্টিস্টের কাছে গিয়ে দাঁত পরীক্ষা করানো উচিত। তাহলে দাঁতে যদি সামান্য কোনো সমস্যাও থাকে, সেগুলো নিমিষেই দূর করা সম্ভব হয়। আর ভবিষ্যতে দাঁতের বড় রকমের সমস্যায় পড়তে হয় না।
❤ লেখাটি ভালো লাগলে অবশ্যই শেয়ার করতে ভুলবেন না।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন