নাক ডাকা থেকে চিরমুক্তি





 Bangla Health Tips: নাক ডাকা সাধারণত পুরুষদের মধ্যেই বেশি দেখা যায়। নাক ডাকা কোনো রোগ নয়, তবে রোগের লক্ষণ হতে পারে। যিনি নাক ডাকেন, তার জন্য এটা ঝুঁকিপূর্ণও। আর অবশ্যই পাশের মানুষটির জন্য এটি বিরক্তির। বয়স, ওজন কিংবা কিছু বিশেষ রোগ বাড়ার সাথে সাথে এর তীব্রতাও বাড়তে থাকে। নাক ডাকার এই অভ্যাস পুরোপুরি বদলানো না গেলেও এর তীব্রতা অনেকাংশেই কমানো সম্ভব। যেহেতু নাক ডাকা প্রতিরোধে করণীয় বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের আজকের এই আয়োজন। সেহেতু চলুন জেনে নেয়া যাক নাক ডাকার বিশেষ কারণসমূহ এবং যে  বিষয়গুলো মেনে চললে নাক ডাকা থেকে পাবেন চিরমুক্তি।

নাক ডাকার বিশেষ কারণসমূহ:

  • শরীরে বাড়তি ওজন, গর্ভাবস্থা এবং কিছুটা বংশগত কারণে মানুষ নাক ডেকে থাকে।
  • মদ্যপান, ধূমপান এবং বিশেষ কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে মানুষ নাক ডেকে থাকে।
  • থাইরয়েডের সমস্যা ও গ্রোথ হরমোনের আধিক্যজনিত রোগের ফলে মানুষ নাক ডেকে থাকে।
  • বয়স বেড়ে যাওয়ার কারণে শরীরে চামড়া ঝুলে যায়, পুরু হয় এবং গলার কিছু পেশীও ফুলে যায়। এর জন্য বয়স্করা নাক ডাকেন তুলনামূলক বেশি।
  • অ্যালার্জি, নাক বন্ধ হওয়া অথবা নাকের ভিন্ন গঠনও নাক ডাকার একটি কারণ। এসব কারণে নাকের ভেতরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচল করতে পারে না এবং নাক ডাকার সৃষ্টি হয়।

নাক ডাকা থেকে চিরমুক্তির উপায়সমূহ:

পর্যাপ্ত ঘুম : আপনার যদি দৈনিক পর্যাপ্ত ঘুম ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা না হয়ে থাকে তাহলে নাক ডাকা বেড়ে যেতে পারে কিংবা হঠাৎ করে শুরুও হতে পারে। অতিরিক্ত ক্লান্তি শরীরের পেশীগুলোকে অলস করে দেয় যা নাক ডাকার অন্যতম একটি কারণ। শরীরের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়ার অনেক কিছুই অভ্যাস নিয়ন্ত্রিত। তাই নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

ধ্যান করুন : ধ্যান বা মেডিটেশন শারীরিক এবং মানসিক বিভিন্ন সমস্যার অন্যতম সমাধান। ধ্যানের মাধ্যমে আপনার অজানা অনেক সমস্যার সমাধানও হতে পারে। ধ্যান করার মাধ্যমেও আপনি নাক ডাকা থেকে মুক্তি পেতে পারেন।

ওজন কমানো : শরীরের অতিরিক্ত ওজন নাক ডাকার সাথে সরাসরি সম্পৃক্ত। বাড়তি ওজন নাকের ভেতরে বাতাস চলাচলের জায়গা সংকীর্ণ করে দেয় এবং শ্বাস-প্রশ্বাস চলাচলের সময় শব্দের সৃষ্টি করে। তাই ওজন কমালে এই সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পাওয়া সম্ভব।

শোয়ার অবস্থান : সোজা এবং চিৎ হয়ে শোবার কারণে জিহ্বা এবং নরম তালু পেছনের দিকে হেলে যায়। যার কারণে মুখের ভেতরে বাতাস চলাচলের জায়গাটা আটকে যায় এবং শব্দের সৃষ্টি হয়। ডান কাতে শোয়া এক্ষেত্রে খুবই ভালো একটি সমাধান। বাম কাতে শোয়ার জন্য বুকের উপর বেশি চাপ পড়তে পারে। তাই সবদিক থেকে ডান কাতে শোয়াটা একটি ভালো উপায়।

উঁচু বালিশে শোয়া : ঘুমানোর সময় একটি বাড়তি বালিশ নিয়ে মাথাটা একটু উঁচু জায়গায় রেখে ঘুমানোর অভ্যাস করুন। লক্ষ্য রাখুন যেন শুধু মাথাই নয়, বুকের দিকটাতেও যেন সামঞ্জস্য বজায় রাখে। তা না হলে ঘাড়ে প্রচণ্ড চাপের সৃষ্টি হতে পারে।

পরিষ্কার রাখুন কক্ষ : ধুলাবালিতে অ্যালার্জির কারণে নাকের ভেতরে অনেক ধরনের সমস্যা হতে পারে। দৈনিক আপনার কক্ষের ফ্যান, আসবাবপত্র, বই-খাতা, চেয়ার-টেবিল এবং প্রাত্যহিক ব্যবহার্য জিনিসপত্র ঝেড়ে রাখুন।

পরিষ্কার রাখুন নাসারন্ধ্র : নাসারন্ধ্র পরিষ্কার রাখাটা খুবই জরুরি। এতে একজন ব্যক্তি সহজভাবে নিঃশ্বাস নিতে পারেন। এ কারণে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে নাক পরিষ্কার করতে হবে। এমনকি এক্ষেত্রে ইনহেলারও ব্যবহার করা যেতে পারে।

ধূমপানকে “না” বলুন : ধূমপানে শরীরের অক্সিজেন ব্যবহারের ক্ষমতা কমে যায়। ফলে বাতাস বের হওয়ার পথ সংকুচিত হয়ে পড়ে। সিগারেটের ধোঁয়া নাকের ভেতরে এবং গলার মেমব্রেন টিস্যুর ক্ষতি করে ফলে বাতাস বের হওয়ার পথ সংকুচিত হয়ে পড়ে। এ কারণেও অনেকে নাক ডাকতে পারেন। তাই উচিত ধূমপানের অভ্যাস ত্যাগ করা।

রাতে খাবারের সময় পরিবর্তন : ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত দুই ঘণ্টা আগে রাতের খাবার খাওয়া উচিত। এতে করে জেগে থাকা অবস্থায়ই খাবার হজম হয়ে যাবে। পরিপাকতন্ত্র ঝামেলা করবে না। রাতে ভালো ঘুম হবে। নাক ডাকাও কমবে।

পরিশেষে, নাক ডাকা কারো জন্যই সুখকর নয়। যিনি নাক ডাকেন এবং যিনি তার পাশে থাকেন উভয়ের জন্যই ব্যাপারটি ব্যাদনাদায়ক। তাই উপরের দেয়া সহজ কিছু নিয়ম মেনে নাক ডাকা থেকে পান চিরমুক্তি। তবে, উপরের দেয়া নিয়মগুলো মেনেও যদি আপনার নাক ডাকার প্রকোপ না কমে তবে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। দূর করুন স্বাস্থ্যঝুঁকি।

লেবেলসমূহ:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

[blogger]

MKRdezign

যোগাযোগ ফর্ম

নাম

ইমেল *

বার্তা *

Blogger দ্বারা পরিচালিত.
Javascript DisablePlease Enable Javascript To See All Widget